বাঙালির জীবনে পৌষের মোহময়তা
৷৷ প্রণব মন্ডল ৷৷ 


ঋতু বৈচিত্র্যের ধারায় আমদের জনজীবনে এখন শীতের আমেজ। কুয়াশার চাদর গায়ে পৌষ এলো আমাদের আঙিনায় । খেজুর রসের ঘ্রাণে মাতোয়ারা চারপাশ। পিঠা পুলির উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে প্রতিটি পরিবার জুড়ে । কুয়াশার আড়মোড়া ভেঙে এক চিলতে রোদ জানালার ফাঁক দিয়ে ঘরে এসে ঢুকে ।আহা তাতেই খুশির ঝলক চোখে মুখে । পৌষ মানে বাঙালির জীবনে গ্রাম্য মেলা এবং পিঠা পুলির উৎসবমুখর পরিবেশ। পৌষ মেলায় নানা রকম হস্তশিল্প সামগ্রী, পিঠা , মুড়ি মুড়কি ,খেজুর গুড়ের নাড়ু এবং গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন থাকে। সাধারণত নতুন ধান কাটার পর ফসলের ফাঁকা মাঠে পৌষ মেলার আয়োজন হয়ে থাকে। পৌষ আমাদের কুয়াশার মায়ায় জড়িয়ে রাখে বাঙালির শত বছরের ঐতিহ্যে ।

করোনা মহামারীর কারণে এই বছর পৌষ মেলার আনন্দে কিছুটা ভাটা পড়েছে । তবু ও বাঙালি জাতিসত্তার সাথে মিশে আছে পৌষের মোহময়তা। নতুন চালের ভাপা পিঠা , চিতই কিংবা খেজুর রসের বাহারি নাড়ু সবই যেন মনকাড়া । আমাদের কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৌষপ্রেম তাঁর বিভিন্ন কবিতায় গানে লিখেছেন।

প্রতি বছর শান্তি নিকেতনে খুব উৎসবমুখর পরিবেশে মাসব্যাপী পৌষমেলা হয়ে থাকে। এই বছর আমরা সেই দুর্লভ আয়োজন থেকেও বঞ্চিত হলাম ভাইরাস এর কারণে। যত রকমের বাঁধা আসুক না কেন তবু ও বাঙালির জীবন থেকে পৌষ এর আনন্দ ম্লান করা যাবে না কখনো। শীতের কুয়াশার শিশিরবিন্দু মাখা পৌষ এবং বাঙালির গ্রামীণ মেলার উৎসবমুখর পরিবেশ বাঙালি জাতিসত্তাকে এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে চিরকাল আবদ্ধ করে রাখবে।

তাই কবিগুরুর গানে ফুটে উঠেছে পৌষের আহ্বান
” পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে
আয়রে চলে আয় আয়রে
ডালা যে তোর ভরেছে আজ রাঙা ফসলে
মরি হায় হায় রে ” ।।